রামু এবং লালু তাদের আগের অভিযানে অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন এক রোমাঞ্চকর অভিযানে বের হলেন। এইবারের লক্ষ্য ছিল সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা এক মজার জাহাজ খুঁজে বের করা, যার নাম “হাসির নৌকা।”
হাসির নৌকার কিংবদন্তি
গ্রামের দাদু-দাদী গল্প করতেন, “হাসির নৌকা একদিন সমুদ্রের গভীরে হারিয়ে গিয়েছিল। সেই নৌকায় ছিল এক অসাধারণ রঙিন জিনিসপত্র, যা দেখে যে কেউ হাসতে বাধ্য হতো। কিন্তু সেই নৌকাটি খুঁজে পাওয়ার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়।”
রামু ও লালু এই গল্প শুনে সিদ্ধান্ত নিলেন যে তারা হাসির নৌকাটি খুঁজে বের করবে এবং গ্রামের সবাইকে আনন্দ দিতে পারবে।
যাত্রার প্রস্তুতি
তারা নৌকা প্রস্তুত করলেন, যা ছিল বিশেষ কারণ এটি রঙিন এবং মজার ডিজাইনে তৈরি। মিস্টার রঙালী তাদেরকে একটি ম্যাপ দিলেন, যা হাসির নৌকার অবস্থান দেখাবে। এছাড়াও, তিনি দিলেন কিছু জাদুকরী সরঞ্জাম, যা তাদের যাত্রায় সাহায্য করবে।
সমুদ্রের অভিযান
নৌকায় উঠলেন রামু এবং লালু এবং রঙিন জাহাজে রওনা দিলেন। সমুদ্রের পথ চলতে চলতে, তারা দেখলেন রঙিন মাছ, নাচতে থাকা জেলি ফিশ এবং নানা ধরনের সমুদ্রের প্রাণী। সমুদ্রের গভীরে প্রবেশ করার সাথে সাথে, তাদের সামনে এল এক বিশাল রাঙামাটির জঙ্গলের মত স্থাপন, যা “রহস্যময় সামুদ্রিক অরণ্য” নামে পরিচিত ছিল।
চ্যালেঞ্জ ১: রঙিন স্ফটিকের গহ্বর
রহস্যময় সামুদ্রিক অরণ্যে প্রবেশ করার পর, তাদের সামনে এল এক বিশাল রঙিন স্ফটিকের গহ্বর। গহ্বরটি ছিল এক ধাঁধা, যা সমাধান করতে হলে সঠিক রঙের স্ফটিক নির্বাচন করতে হবে।
রামু বলল, “আমরা আমাদের চারপাশের স্ফটিকগুলি থেকে সঠিক রঙ নির্বাচন করব।”
লালু সম্মত হলো এবং তারা মিলে সঠিক রঙের স্ফটিকগুলো গহ্বরের মধ্যে বসাতে লাগল। সঠিক রঙের স্ফটিক বসানোর সাথে সাথে গহ্বরটি আলো দিয়ে ঝলমল করতে শুরু করল এবং পথ খুলে দিল।
চ্যালেঞ্জ ২: সমুদ্রের বাঘরাজের ধাঁধা
পথ চলতে চলতে, তাদের সামনে এল এক বিশাল সমুদ্রের বাঘরাজ, যার চোখে ছিল এক রহস্যময় দীপ্তি। বাঘরাজ বলল, “তোমরা যদি হাসির নৌকায় যেতে চাও, তাহলে তোমাদের একটি ধাঁধা সমাধান করতে হবে।”
প্রথম ধাঁধা ছিল: “আমি তোমার সাথে সবসময় থাকি, কিন্তু তুমি আমাকে কখনও দেখতে পাই না। আমি কী?”
রামু বলল, “এটা বাতাস!”
বাঘরাজ হাসলেন এবং বললেন, “সঠিক উত্তর! এখন তোমাদের দ্বিতীয় ধাঁধা।”
দ্বিতীয় ধাঁধা ছিল: “আমি তোমাদের পথ দেখাবো, কিন্তু আমি নিজে কখনও চলব না। আমি কী?”
লালু বলল, “এটা হয়তো মানচিত্র!”
বাঘরাজ আবার হাসলেন এবং বললেন, “তুমি আবার ঠিক ধরেছো! এখন তোমরা হাসির নৌকায় যেতে পারবে।”
হাসির নৌকার সন্ধান
বাঘরাজ তাদের পথ দেখিয়ে দিলেন একটি রঙিন গুহার দিকে, যেখানে হাসির নৌকা লুকিয়ে ছিল। গুহার ভিতরে প্রবেশ করার পর, তারা দেখলেন এক বিশাল রঙিন নৌকা, যা আলোকিত ছিল রংধনুর আলোয়।
নৌকায় উঠলেন রামু এবং লালু এবং হাসির নৌকাটি তাদের নিয়ে গেল এক চমৎকার স্থানে, যেখানে ছিল এক বিশাল রঙিন মুক্তার সিঁড়ি, যা সমুদ্রের গভীরে পৌঁছাচ্ছিল।
হাসির নৌকার রহস্য
হাসির নৌকায় পৌঁছানোর পর, তারা দেখলেন নৌকাটি রঙিন সিঁড়ি দিয়ে ভরা। সিঁড়ি ধরে চড়তে গিয়ে, তারা দেখলেন এক বিশাল রঙিন গুপ্তধন, যা বিভিন্ন রঙের মুক্তা, রংধনুর পাথর এবং মজার খেলনা দিয়ে ভর্তি ছিল।
গুপ্তধনের মর্ম
রামু ও লালু বুঝতে পারলেন যে, এই গুপ্তধনটি গ্রামের সুখ ও আনন্দের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে এই রত্নগুলো গ্রামে ফিরিয়ে আনবে এবং সবাইকে আনন্দ দেবে।
গ্রামে ফিরে আসা
হাসির নৌকা দিয়ে গ্রামে ফিরে এলেন রামু এবং লালু। গ্রামের সবাই তাদের স্বাগত জানালো এবং তাদের কীর্তি উদযাপন করলো। মিস্টার রঙালী বললেন, “তোমরা আমাদের গ্রামের সত্যিকারের নায়ক। এই রত্নগুলো আমাদের সবসময় সুখী ও আনন্দিত রাখবে।”
রামু এবং লালু বুঝতে পারলেন যে, সত্যিকারের গুপ্তধন হলো তাদের বন্ধুত্ব, বুদ্ধিমত্তা এবং সাহসিকতা। তারা জানত যে, যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে তারা সবসময় সফল হবে।