রামু ও লালু তাদের রঙিন অভিযানের পর আরও একটি মজার গল্পের সন্ধানে বের হলেন। এক রাতে, যখন তারা নদীর পাশে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল, তারা দেখল চাঁদটি খুবই রঙিন এবং আলোকিত। হঠাৎ চাঁদ থেকে এক রঙিন রশ্মি তাদের দিকে নামে এবং বলল, “রামু ও লালু, আমি চাঁদের রাজ্য থেকে এসেছি। আমাদের রাজ্যে একটি মজার সমস্যা হচ্ছে, এবং আমরা আপনার সাহায্য চাই।”
রামু ও লালু একসাথে রাজ্যের দিকে তাকালেন এবং রাজ্যের পথে হাঁটা শুরু করলেন। তাদের রঙিন নৌকা আবার তাদের চাঁদের রাজ্যে নিয়ে গেল।
চাঁদের রাজ্যে প্রবেশ
চাঁদের রাজ্যে পৌঁছালে তারা দেখল সবকিছুই রঙিন এবং মজার। চাঁদের গাছগুলি আলো দিয়ে ঝলমল করছিল, রঙিন ফুল ফোটাচ্ছিল, এবং মজার প্রাণীরা খেলা করছিল। কিন্তু কেন্দ্রস্থলে পৌঁছালে তারা দেখতে পেল রাজার মহল বন্ধ হয়ে গেছে এবং রাজা ও রাজকন্যা খুব চিন্তিত ছিলেন।
রাজা বললেন, “রামু ও লালু, আমাদের রাজ্যে একটি মজার ঘড়ি নেই। এই ঘড়ি আমাদের সময়কে নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর অভাবে আমাদের রাজ্যে সবকিছু গোলমাল হচ্ছে। আপনি দুজন যদি আমাদের সাহায্য করতে পারেন, তবে আমরা আপনাদের ধন্যবাদ জানাব।”
রামু এবং লালু রাজাকে সাহায্য করতে রাজি হলেন। রাজা বললেন, “ঘড়িটি আমাদের রাজ্যের উত্তরে, মজার গুহার মধ্যে আছে। সেখানে অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।”
মজার গুহার অভিযান
রামু ও লালু মজার গুহার পথে হাঁটতে লাগলেন। গুহার প্রবেশপথে তাদের একটি রঙিন পাজল দেখে দেখতে পেল। পাজলটি ছিল এক বিশাল সময়ের চিত্র, যা ঘড়ির অংশ। পাজলটি সমাধান করতে হলে সঠিক রঙের টুকরো স্থানে বসাতে হবে।
রামু বলল, “আমরা আগের মতই এই পাজলটি সমাধান করব।”
লালু সহায়তা করতে লাগল, “হ্যাঁ, এই টুকরোটা ঘড়ির মেরুদণ্ড হতে পারে।”
তারা মিলে পাজলটি সমাধান করল এবং গুহার প্রবেশপথ উন্মুক্ত হল। গুহার ভিতরে প্রবেশ করার পর তারা দেখল এক বিশাল রঙিন ঘড়ি, যা থেমে আছে।
ঘড়ির রহস্য
রামু ঘড়িটির দিকে এগিয়ে গেল এবং দেখল ঘড়ির মাঝখানে একটি মজার দুষ্টু পরা ব্যাঙ বসে আছে, যার নাম ছিল বম্ব। বম্ব ঘড়ির কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল কারণ সে নিজে মজা করতে চেয়েছিল।
রামু বলল, “বম্ব, কেন তুমি ঘড়ির কাজ বন্ধ করেছ?”
বম্ব বলল, “আমি শুধু মজা করতে চাইছিলাম, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি যে ঘড়ি না চললে রাজ্যে গোলমাল হচ্ছে।”
লালু বলল, “বম্ব, আমরা সবাই মিলে মজা করতে পারি, কিন্তু তোমার মজা অন্যদের সমস্যা সৃষ্টি করছে। তুমি ঘড়িটি আবার চালু করবে?”
বম্ব ভাবতে লাগল এবং বলল, “হ্যাঁ, আমি আবার চেষ্টা করব।”
রামু ও লালু বম্বকে উৎসাহ দিলেন এবং তাকে ঘড়িটি চালু করার জন্য সাহায্য করলেন। তারা মিলে ঘড়িটির সকল অংশ ঠিকঠাক করল এবং বম্ব ঘড়িটি আবার চালু করল।
ঘড়িটি পুনরায় চলতে শুরু করল এবং রাজ্যের সময় নিয়ন্ত্রণ করতে লাগল। রাজা এবং রাজকন্যা খুব খুশি হলেন এবং রামু ও লালুকে ধন্যবাদ জানালেন।
উপসংহার
চাঁদের রাজ্যে ফিরে এসে, রাজা ও রাজকন্যা রামু ও লালুকে একটি বিশেষ রঙিন পাথর উপহার দিলেন, যা যেকোনো সময় মজা এবং হাসি ছড়াতে সাহায্য করবে। রামু ও লালু আবার তাদের গ্রামে ফিরে এলেন, কিন্তু তারা জানত যে পৃথিবীতে আরো অনেক মজার অভিযান তাদের অপেক্ষা করছে।
রামু ও লালুর এই চাঁদের অভিযান শেষ হল, কিন্তু তাদের বন্ধুত্ব এবং সাহসিকতা আরও মজবুত হল। তারা বুঝতে পারল যে, মজা এবং হাসি ছাড়া জীবন একেবারেই অসম্পূর্ণ।
রামু ও লালু তাদের গ্রামে ফিরে এসে সবাইকে এই চাঁদের রাজ্যের গল্প শোনালেন এবং সবাইকে উৎসাহিত করলেন হাসি ও আনন্দ ছড়াতে। গ্রামবাসীরা আবারও আনন্দে ভরে উঠল এবং রামু ও লালু সবসময় নতুন নতুন মজার গল্প নিয়ে আসতেন, যাতে সবাই মিলে সুখী ও হাসিখুশি থাকত।