...

রংধনুর খোঁজে রাজপুত্র তামসার অভিযান

রংধনুর খোঁজে রাজপুত্র তামসার অভিযান

Table of Contents

একসময় এক দূরের দেশে ছিল রঙীন রাজপুত্র তামসা। তামসা ছিল খুবই সাহসী, মজার এবং কৌতূহলী ছেলে। তার রাজ্যে সবকিছুই ছিল রঙিন এবং আনন্দময়। কিন্তু একদিন, রাজ্যের সব রং ধীরে ধীরে মিলিয়ে আসতে শুরু করল। ফুলের রং ফিকে হয়ে গেল, আকাশের নীলও কুদকুদে গেছে, এবং গ্রামের সবাই মনে করতে লাগল যে রাজ্যটি ধীরে ধীরে রঙহীন হয়ে যাচ্ছে।

রাজা এবং রানী খুব চিন্তিত হলেন। তারা জানতে পারলেন যে রাজ্যের প্রাণীরাজেরা রংহীন হয়ে যাওয়ার কারণ। তামসা, তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে, ঠিক করল যে সে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে বের হবে।

তামসা তার বিশ্বস্ত সাথী—হাসি খুশি বানর মিঠুন এবং বুদ্ধিমান পাখি চিড়ুই—নিয়ে একটি দীর্ঘ অভিযানে বের হল। তাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল রংধনুর গুহা খুঁজে বের করা, যা বলে মনে হয় রাজ্যের সব রংয়ের উৎস।

রংধনুর খোঁজে রাজপুত্র তামসার অভিযান

প্রথম দিন: রঙীন জঙ্গলে যাত্রা

তামসা, মিঠুন এবং চিড়ুই রংধনুর গুহার দিকে রওনা দিল। পথে পথে তারা রঙীন ফুল, রঙিন পাখি এবং রঙিন পাতা দেখতে পেল। কিন্তু হঠাৎ করেই, তারা দেখতে পেল যে রঙগুলি ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যাচ্ছে। মিঠুন নাচতে নাচতে বলল, “এই রঙগুলো ঠিকই না! আমাদের দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে।”

দ্বিতীয় দিন: মজার নদী এবং সাপের পরীক্ষা

পরের দিন, তারা পৌঁছাল মজার নদীর কাছে। নদীটি ছিল জেলেটিনের মতো নরম এবং মিষ্টি স্বাদের। কিন্তু নদীর মাঝখানে ছিল একটি বড় সাপ, যার নাম ছিল ক্যান্ডি সাপ। ক্যান্ডি সাপ খুবই মজার ছিল এবং সবসময় হাসতো। কিন্তু সে একদিন রংধনুর গুহার রং চুরি করে নিয়েছিল, তাই রাজ্যের সবকিছু রঙহীন হয়ে গেল।

তামসা সাহস করে ক্যান্ডি সাপের কাছে গেল এবং বলল, “ক্যান্ডি সাপ, তুমি কেন রংধনু চুরি করেছো? আমাদের রাজ্য এখন রঙহীন হয়ে যাচ্ছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করো।”

ক্যান্ডি সাপ হেসে বলল, “আমি রংধনু আমার গুহায় নিয়ে গিয়েছিলাম কারণ আমি নিজেও রংহীন হয়ে গিয়েছিলাম। রাজ্যের রং হারিয়ে গেলে আমারও আনন্দ নেই।”

তামসা বলল, “আমরা একসাথে কাজ করতে পারি। তুমি যদি আমাদের সাহায্য করো, তাহলে আমরা তোমাকে আবার রং ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করব।”

ক্যান্ডি সাপ সম্মতি দিল এবং তারা একসাথে গুহার দিকে এগিয়ে গেল। গুহার ভিতরে ছিল এক বিশাল রঙধনু গ্লোব, যা রাজ্যের সব রঙের উৎস ছিল। কিন্তু গ্লোবটি বন্ধ ছিল এবং কোনো রং বেরোচ্ছে না।

রংধনুর খোঁজে রাজপুত্র তামসার অভিযান

তৃতীয় দিন: রঙধনুর রহস্য উন্মোচন

তামসা, মিঠুন, চিড়ুই এবং ক্যান্ডি সাপ মিলে গুহার ভিতরে প্রবেশ করল। সেখানে তারা দেখতে পেল যে রঙধনু গ্লোবের চারপাশে রঙিন পাথরগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, কিন্তু কোনেই রঙ নেই। তামসা বুঝতে পারল যে কেউ রঙচুরি করে এই পাথরগুলিকে নষ্ট করে দিয়েছে।

তারা একটি পুরানো মানচিত্র খুঁজে পেল যা বলেছিল রঙধনুর গুহার ভিতরে একটি বিশেষ কক্ষ আছে, যেখানে রাজ্যের সব রং জমা হয়। তারা সেই কক্ষ খুঁজতে লাগল এবং পাথরের গোলকধাঁধার মধ্যে দিয়ে চলতে চলতে পৌঁছাল শেষমেশ সেই কক্ষ।

চতুর্থ দিন: রঙের শক্তি পুনরুদ্ধার

কক্ষের কেন্দ্রে ছিল একটি বিশাল রঙধনু গ্লোব, যা ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছিল। তামসা বুঝতে পারল যে রাজ্যের রঙের শক্তি ফুরিয়ে আসছে। তিনি ভাবলেন কীভাবে এই শক্তিকে পুনরুদ্ধার করা যায়।

তামসা স্মরণ করলেন তার বাবা রাজা তাকে বলেছিলেন, “সত্যিকারের রঙ আসে আমাদের ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং একতা থেকে।” তামসা এবং তার সাথীরা একসাথে হাত ধরল এবং একটি বড় হৃদয় আকৃতি তৈরি করল।

তাদের একতার শক্তি রঙধনু গ্লোবের উপর পড়ল এবং হঠাৎ করেই রঙগুলি আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠল। রাজ্যের সব রং ফিরে এলো এবং রাজ্য আবার রঙিন হয়ে উঠল। ক্যান্ডি সাপও আবার রঙিন হয়ে গেল এবং সে রাজ্যের সুরক্ষা করার প্রতিজ্ঞা করল।

রংধনুর খোঁজে রাজপুত্র তামসার অভিযান

পঞ্চম দিন: রাজ্যে ফিরে আসা

তামসা, মিঠুন, চিড়ুই এবং ক্যান্ডি সাপ রাজ্যে ফিরে এলেন। সবাই তাদের স্বাগত জানাল এবং তাদের এই সাহসী অভিযানকে সম্মান করল। রাজা ও রানী খুবই গর্বিত হলেন এবং তামসাকে রাজ্যের রং রক্ষাকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করলেন।

তামসা বুঝতে পারল যে সত্যিকারের রঙ আসে মানুষের মন থেকে। তিনি রাজ্যে সবাইকে শিখালেন কিভাবে একতা, ভালোবাসা এবং হাসি দিয়ে রাজ্যকে রঙিন রাখা যায়।

রাজ্যে আবার সবকিছু রঙিন ও আনন্দময় হয়ে গেল। তামসা এবং তার সাথীরা সবসময় রাজ্যের রঙ রক্ষার জন্য কাজ করতে থাকলেন এবং রাজ্যটি সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগল।

Search

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.